ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস ও নারীদের প্রতি জিঘাংসা মনোভাব

লিখেছেন লিখেছেন ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না ৩১ মে, ২০১৩, ১১:০৪:০৪ রাত

ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলামঃ

দিন দিন আশ্চার্য হচ্ছি এবং বেঁচে আছি অসাভাবিক আশংকা নিয়ে। স্বাধীনতার এই বাংলাতে নিজের ইজ্জত-আভ্রু নিয়ে স্বাধীন থাকতে পারবো তো? যাদের হাতে আমাদের নিরাপত্তার দায়ভার তারাই আমাদের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁয়েছে। মৃত্যু ছাড়া তো মন্দের ভাল সম্মান নিয়ে বাঁচার আর কোন পথ দেখি না। আসলে আমরা স্বাধীন দেশে বাস করি?

একজন ভদ্রলোক মন্তব্য করেন-

tobe mayadar eakto valo kora rastai bar hota hoba.ulta puta poshak pora berhola to hobai

লোকটি আবার লিখল-

apni ke janan ja mayadar ai choto choto poshak pora ja rastai bar hoi. ai jonn salader monar naja ke hoi.

আমি লিখলামঃ-

আপনার কথা ঠিক।

কিন্তু একটি মেয়ে যেই ইন্দ্রিয় শক্তির অধিকারী ঠিক একটি ছেলেও ঠিক তেমনি। ছেলেটি যদি ভাল হয় তাহলে একটি মেয়ে যেই অনুভূতি নিয়ে খোলামেলা পোশাক পড়ে ছেলেটিও সেই অনুভূতিতে নিজেকে পাপাচার থেকে বিরুত রাখবে। কী মিথ্যা বললাম? নিজের অযগ্যতা

অন্যের ঘাড়ে চাপানো কি ঠিক ইমরান?

অন্য আরেক ভদ্রলোক লিখেছেন-

কিছু মনে করবেননা, আমি যেটা বলবো সেটা হল আপনি ইমরান কে যেটা বুঝালেন এটা যৌক্তিক না কারন আমরা সবাই জানি যে একটি মেয়ে কে শুধু ১৪ জন পুরুষ লোক দেখতে পারার নিয়ম আছে।কারন এ ১৪ জন লোকের সাথে কথা বলা দেখা করা যায়েজ আছে। এদের কারও কোন খারাপ উদ্দেশ্য কখওনই থাকেনা সম্পর্ক টাই এমন। এছারা যারা আছে সবাই যদি একটি মেয়েকে এরকম খোলামেলা দেখে তাহলেতো ওটাই হয়ে যায় আপনি দয়া করে কোরআন পড়বেন হাদিস পড়বেন তাহলে আপনার এ ভুল চিন্তা ভাবনার ধ্বংস হয়ে যাবে।

আমি তাকে স্ট্যাটাসটা ভাল করে পড়ার অনুরোধ করলে সে আবারও লিখে-

আমি পুরোটা পড়েছি এবং বুঝেই বলেছি আমি সেই মেয়েদের কথাই বলেছি যারা এভাবে বের হয়,তারা যদি এভাবে না বের হয় তাহলে এই পাপ থেকে বাচা সম্ভব। কারন চড় যে আগে মারে তারই বিচারে হারা উচিত।সে যদি এভাবে বের হয় তাহলে তো প্রতেক মানুষের সামনে দিয়ে তাকে যেতে হয় পথ চলতে হয় এতে সবার চোখে পড়ে যায়। আর এজন্যই এটা ওই মেয়েটিরই দোষ। সত্যিকার অর্থে কি একজন পুরুষকে একটি মেয়েই পারে বেহেস্তে নিতে আবার দোজগের আগুনে জ্বালাতে।আমি ভাল থাকলাম কিছুই খারাপ চিন্তা করলাম না কিন্তু সেই মেয়েকে দেখার পড় আমি কিন্তু তাকে খারাপ জানবো।

আমি বরাবরই অবাক হলাম তাদের চিন্তাধারা ও নিজস্বতা দেখে। কেন তারা দোষটা কেবল মেয়েদেরই দিচ্ছে? মেয়েরা ঘর থেকে বের না হলে, স্কুল-কলেজে-মাদ্রাসা-মক্তবে না গেলে, নিজ কর্মস্থলে না গেলেই কি সব সমস্যা শেষ? তার পর থেকে কি আর কোন মেয়ে ইভটিজিং এর শিকার হবে না? আর একটি মেয়েও হবে না ধর্ষিত?

পুরুষরা তাদের হিংস্রতা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। তাদের ধর্ষণ না করার জন্য উপদেশও দিবেন না।কেবল বলবেন, মেয়েরা রাস্তায় বের না হলে আজ ছেলেমেদের এ দুরবস্তা হত না?

আমি আবারও বলি, একজন পুরুষের যেমন অনুভুতি শক্তি আছে তেমনি একজন মেয়েরও আছে।যে দৃশ্য দেখে একজন পুরুষের হিংস্রতা জেগে উঠে তা দেখে একজন মেয়েরও জেগে উঠার কথা। কিন্তু পুরুষ সে তার হিংস্রতা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না এবং কখনও পারবে না। কারণ সে পুরুষ। মেয়রা পারে এবং সে মেয়ে বলেই পারে তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে । কই কোন দিন কি শুনেছেন পুরুষ ধর্ষিত হয়েছে? রাস্তায় দাঁড়িয়ে ওমুক মেয়ে ওমুক ছেলেকে টিজ করেছে? না কোন দিনই শুনবেন না।কারণ যাদের জন্য প্রস্ফুটিত হয় বাগানের সমস্ত ফুল।যাদের জন্য অপেক্ষমান পৃথিবীর সুন্দর্য এবং যাদের দ্বারা টিকে আছে আজকের সভ্যতা তাদের দ্বারা এমনটা করা সম্ভব না । আদৌ না।কিন্তু তারপরও কি বলবেন মেয়েরা রাস্তায় বের না হলে আজকে সমাজের অবস্থা হত না।

আরে মিয়া আগে নিজেকে বদলান। তারপর অন্যকে, সমাজকে বদলানোর চিন্তা করুন।নিজের অযোগ্যতা অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে কেরদানি দেখানোর নাম পুরুষ না। কাপুরুষতা।বুঝলেন?

বিষয়: বিবিধ

২৮০৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File